যারা আজ শিবির, শিবির বলিয়া ঘুম হারাম করিয়া বার বার রেস্ট রুমে যাচ্ছেন- তাদেরকে বলি যার সাথে ঘর করেন তার পরিচয় কি একবারও খোঁজে দেখেছেন? তারপর না হয় সিদ্ধান্ত নেবেন কি করবেন। এই যে ছাত্র জনতার আন্দোলনে পৃথিবীর কথিত সবচেয়ে শক্তিধর দলের সেরা নেত্রী পালিয়ে গেছেন। এটা কি অট হইয়া গেছে বলেন আপনার ধারণা৷ না সেটা ভুল। শিবির কখনও ছাত্রদল, লীগ, ইউনিয়ন, মৈত্রীর মত আজান দিয়ে নামাজে যায়না। এমনকি ঘন্টা বাজিয়ে বা শব্দ শুনে মন্দিরেও যায় না। বরং মন্দিরে যেয়ে ঘন্টা বাজায়৷ বরং এরা নামাজে যেয়ে আজান দেয়৷ অর্থাৎ ঘুমে- শয়নে সপনে যেখানে যে অবস্থায় থাকুক শিবির কর্মীরা তার নিজের কাজটা সময় মতই করেন। তাদের মানবসেবা আর রাজনীতির ধরণ তারা কখনই এক রকম রাখে না। শিবিরের কর্মীরা মারাত্বক প্রতিকূল পরিবেশেও নিজেকে বেচে দেয় না৷ এমন কি দলের সাথে গাদদারি করে না। তাদের কমিটমেন্ট আর দলের প্রতি আনুগত্য হলো অনেকটা পানির ধর্মের মত। সামনে যত বড় বাধাই থাকুক নিজ পথে প্রবাহিত হবেই হবে। এরা নিজের টিফিনের টাকা থেকেও দলকে ডনেট করেন৷
ফলে ঢাবি, জাবির সমনয়ন্বক নিয়া যাহারা এখনও দ্বন্দে আছেন তারা অপেক্ষা করেন৷ কেননা শিবির কখনই তাড়াহুড়ো করে না৷ শিবির কখনও এক প্রজন্মের পলিটিক্স করে না। আপনি আজ সারাদেশে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে শিবির। এবং এটা অতীতেও হয়েছে। কারণ তারা পলিটিক্স নিয়ে কোন গেইম খেলে না। বরং তারা কল্যানকর কাজ দিয়ে মানুষের হৃদয়ে ঢোকে। আর পলিটিক্স টা তখন তাদের পকেটে অট ঢুকে পড়ে। এই যে জামাআতের আমীর গত তিন মাস যাবত যা যা করছেন। এর কোন কাজটা আপনার সমর্থিত কয়টা দল তা করেছে? কয়জন শহীদ পরিবারের বাড়িতে আপনি গেছেন? আমি গেছি।
কিন্তু দেখেন শিবির কোন কোন জায়গায় গেছে। সেটা আপনি টের পাইবেন আরো কয়েকদিন বাদে। এজন্য সবর করেন৷ তবে এইবার এতসব কথা কেন কইলাম কহেন দেখি। সেই প্রশ্নটা হইল- হ্যাঁ শিবিরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কতজন ধর্ষণ মামলার আসামী, চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজির সাথে কতজন জড়িত। কিংবা বান্ধবীর প্রেমে হাবুডুবু খেয়ে কৌশলে পেটে বাচ্চা ঢুকিয়ে দিয়েছেন এ রকম কোন নজির আপনি দিতে পারিবেন? জানি পারবেন না। অযথাই তর্ক করিবেন৷
আর এইটাই হলো তাদের মূলমন্ত্র। কারণ তাহারা নিজেদের সংবরণ করিতে জানে। আর সেটা হয় দলীয়ভাবেই। কারন কারও চরিত্রে ন্যুনতম সমস্যা পরিলক্ষিত হইলে তাহারে লইয়া দলীয়ভাবে শোধরানোর মিশনে নামে এই শিবির। এবং সেই মিশনে শিবির কখনই ব্যর্থ হয় না।
এইবার বলেন রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সবচেয়ে শক্তিশালী সেটা সবাই জানি। কিন্তু বলুন তো সেখানে শিবির কয়টা টেন্ডারবাজি কিংবা কয়টা ধর্ষণ করিয়াছে। একটাও কি দৃষ্টান্ত আপনি দেখাতে পারিবেন?
এতকিছু লেখার পর হয়তো আপনি মনে মনে ভাবছেন এসব আমি কিভাবে জানলাম। হ্যাঁ এটাই সাংবাদিকতা৷ এটাই গোয়েন্দাগিরি। আবার আপনি ইহাও ভাবিতে পারেন হয়তো ছাত্রজীবনে এই শয়নে সপনে এই মানিক মুনতাসিরও মনে হয় শিবিরের কর্মীই আছিল। কিংবা আছে। সেটা আপনার ভাবনাপ্রসূত ব্যাপার। কিন্তু আমি যাহা বলিয়াছি পারলে তাহা আপনি যুক্তি দিয়া খন্ডায়া দেখান।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।